Saturday, March 26, 2016

খেলার জন্য খেলার জামা

বাচ্চাদের একটা নিজস্ব কল্পনার জগত আছে। কি গভীর ভাবে মগ্ন হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তারা এই আপন ভুবনে কাটিয়ে দিতে পারে। তার এই কল্পনার জগতে চলে যাওয়ার মূল উপায় হল খেলা। কখনো সে সাজে শক্তিশালী বীর, মা কে উদ্ধার করে রাক্ষস খোক্কসের কবল থেকে, কখনো চলে পুতুলের মা হয়ে তাদের যত্ন আত্তি, রান্না বান্না, স্কুল। মনে আছে আমি যখন ছোট ছিলাম, কাঠগোলার বাসাতে প্রতিদিন বিকালে বাসার নিচে খেলতে নামতাম। বিশাল বিশাল কাঠের গুড়ি জড়ো করা ছিল,  সেইগুলিতে আমার ছোটভাই আর সমবয়সী বন্ধুদের সাথে জাহাজ জাহাজ খেলতাম। সন্ধ্যা গড়ালেও সেই কল্পনার জাহাজ, সমুদ্র, ঢেউ, জলদস্যু ফেলে উপরে আসতে একদম ইচ্ছা করত না। মায়ের বকুনিও যেন শুনতে পেতাম না খেলার নেশায়।

তবে এখনকার বাচ্চাদের সেই দুরন্ত শৈশব নেই।
কল্পনার জগতটাও কার্টুন ছবি কে ঘিরে।
বাবা মা হিসেবে সবাই আমরা চাই, সীমাবদ্ধতার মাঝেও সন্তানকে সবটুকু আনন্দের যোগান দিতে। সেই ইচ্ছা থেকেই আজ আমি আপনাদের বলব কিভাবে আমি আমার বাচ্চাদের খেলার পোশাক বানিয়ে দিয়েছি।

স্বাগত আমার শখের দুনিয়া, শখের ব্লগে।

মূলত আমি এই বুদ্ধি পেয়েছি একটি ইউটিউব ভিডিও থেকে। আমি সহজে বাচ্চাদের জামা বানানোর কৌশল খুঁজছিলাম, তখন এক মায়ের পোস্ট করা একটা ভিডিও দেখে আমিও বাচ্চাদের এলসা -আনার জামা বানাতে বসলাম

এইজন্য প্রথমে বাচ্চার একটি পুরানো গেঞ্জি নিয়েছি। চাইলে নতুন কাপড় কিনেও বানাতে পারেন। বাচ্চার মাপে গেঞ্জি নিলে সুবিধা হল, কষ্ট করে মাপ নিয়ে টপ্স টুকু আর বানাতে হবেনা। যারা সেলাই ফোঁড়াই করেন, তারা জানেন, টপস বানানোর অংটুকুই বেশি ঝামেলার কাজ।
চাইলে গেঞ্জির সেলাই খুলে পছন্দমত কাপড় বসিয়ে নিতে পারেন।
বা গেঞ্জিটার যে অংশে লেখা বা ছবি আছে শুধু সেইটুকু ঢেকে নিন। লেস লাগিয়ে নকশা করে নিতে পারেন।

এবার নিচের ঘের বানানো জন্য আপনি একই ভাবে নতুন কাপড়, বা পুরান ওড়না বা শাড়ির টুকরা ব্যাবহার করতে পারেন। পা পর্যন্ত লম্বা মাপ নিয়ে কাপড় কেটে নিন। নইচে ভাঙুন।  দুই মাথা জুড়ে নিন।
এবার টপ্সের সাথে জোড়া দিতে হব্র।
সেজন্য টপসটি সোজা দিকে রাখুন। ঘেরের কাপড়টি উলটে নিন।
আপনি একপাশের সেলাই থেকে সেলাই শুরু করবেন। তাহলে জামার কিনার বরাবর সেলাই পরবে। মাঝ বরাবর সেলাই পরলে দেখতে ভালাও লাগবেনা
প্রথমে কাপড় দুটি একটির সাথে আরেকটি আটকে নিন।
এবার অন্যপ্রান্ত পিন বা সেফটি পিন দিয়ে আটকে নিন। এতে সামনে পইছনে কুচির পরিমাণ সমান থাকবে।
চাইলে প্রথমে ঘেরের কাপড়টি বড় বড় ফোড় দিয়ে টাকিয়ে নিয়ে পরে টপ্সের সাথে জুড়তে পারেন।
এবার কাপড় দুটি জোড়ার সময় খেয়াল রাখবেন, টপদ থাকবে টানটান আর ঘেরের কাপড়টি হবে কুচি কূচী।


টপ্স আর ঘের লাগানো হলে একই সেলাই বরাবর আরেক লেয়ার সুতি কাপরের লাইনিন লাগাতে পারেন। বিষেষ করে জামাটির কাপড় যদি সিন্থেটিক হয়। এছাড়ক লাইনিন লাগালে জামাটি ফোলা ফোলা হবে, যেটা বাচ্চারা পছন্দ করে।
আমি অল্প কাপড় দিয়ে বানিয়েছি বলে জামার একপাশে একটি কাটা রেখেছি। যেন খেলার সময় দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে বাচ্চারা পরে না যায়। তাছাড়া এলসার জামাতে এমন একটা কাটা আছে। তাই এই কাটা দেখে বাচ্চারা আরো খুশি হয়।

এবার পিছনের ঝালর।
একটি পাতলা ওড়না মাপনত কেটে কুচি কুচি করে পিঠের কাপড়ের সাথে আটকে দিন।

হয়ে গেল বাচ্চার খেলার প্রিন্সেস ড্রেস।

সাথে এমন এক সংগী রাজকন্যা থাকলে তো কথাই নেই। মনের আনন্দে খেলতে থাকবে আপনার প্রিন্সেস।
আসলে বাচ্চাদের প্রিন্সেস আদলে কেনা পার্টি ড্রেস গুলোতো শুধু বেড়ানোর সময়েই পরানো হয়। আর তখনো খেয়াল থাকে যেন সেটা ময়লা না হয়, বা ছিঁড়ে ফেটে না যায়।তাই সেই জামা পরে খেলতেও বারণ।

আপনি কি ইতস্তত করছেন? কেমন হবে ব্যাপারটা? মোটেই না। একটা খেলার জামা এভাবে বানিয়েই দেখুন না ওদের আনন্দের বন্যা
আর আমার মত আনাড়ি হলেও কিচ্ছুটি হবেনা। খেলার জামাই তো, অত নিখুঁত হওয়ার প্রয়োজন নেই। খরচ নেই বললেই চলে, শুধু দরকার ঘন্টাখানেক সময়।

কেমন লাগল বলুন বুদ্ধিটা?
অসংখ্য ধন্যবাদ।

Thursday, March 24, 2016

হাতে বানানো গয়না






সবাই কে স্বাগত আমার শখের দুনিয়া শখের ব্লগে।

আজ আপনাদের বলব কুশি কাটার সেলাই নিয়ে।
আমার মায়ের কাছ থেকে কুশি কাটার সেলাই করা শিখেছি সেই ছোট্টবেলায়।
একটা ফস্কা গেরো দিয়ে তার ভিতর দিয়ে সূতা টেনে নিয়ে এসে হয় 'চেইন'। আর 'লং' করার জন্য একটা বেইজ লাগে। হয় একটা চেইন ফোড় দিয়ে বানানো গোল বা শুধু একটা চেইন। বা কাপড়, যদি লেইস বানাতে চান।
সেজন্য আগে কতটুকু লম্বা লং বানাতে চান, সে কয়টা চেইন তুলুন।কাটায় একবার সুতা পেচান। বেইজে আটকান সূতা পেচিয়ে।আপনার কাটায় এখন তিনটা সূতা। বাইরে থেকে নতুন সূতা টেনে প্রথমে দুই ঘর ছাড়ুন।কাটায় আছে দুই প্যাচ। এখন আবার সুতা টেনে  ঘর দুটা ছেড়ে দিন। ব্যাস।

আমি আজ কুশি দিয়ে আংটি বানিয়েছি।


প্রথমে চারটা চেইন তুলেছি।
প্রথম আর শেষ চেইন বন্ধ করে গোল বানিয়েছি। এইটা আপনার ফুলের বেইজ।
এবার একঘর চেইন তুলেছি।

এখন লং। তবে এক প্যাচের লং না, দুই প্যাচের লং। লং করার নিয়ম একই শুধু মাঝের সূতাটুকু দুইবার পেচাতে হয়।
এরকম চারটা লং তুলুন
এবার চেইন তোলার মত করে ঘরটা আটকে দিন বেইজের সাথে। হয়ে গেল একটি পাপড়ি
এভাবে চার বা পাচটি পাপড়ি বানান

লক্ষ্য করুন, সেলাই যেন গোল বেইজের চারদিক ঘিরে হয়, তাহলে পাপড়ি গুলো আপনি পছন্দ মত আঁটসাঁট করে নিতে পারবেন।

এবার আঙুলের মাপ নিয়ে চেইন তুলুন।
চেইন এর আরেক মাথা ফুলের অন্যপাশের পাপড়ির সাথে আটকে দিন।

এবার আংটির টুকুকে মজবুত করতে চেইনকে বেইজ ধরে এক ঘরের লং তুলতে থাকুন।লং গুলো আঁটসাঁট করে নিন।

হয়ে গেল আপনার হাতে বানানো গয়না।
বাড়তি সুতা গুলো কাটার সময় বর করে কাটুন।পুরো জিনিসটা বানানো হয়ে গেলে কাটা ঘুরিয়ে নিচে সূতা এনে গিট দিয়ে চোখে পরেনা এমন ভাবে কেটে দিন।

বাচ্চাদের খুব প্রিয় এমন আংটি। সুতার, তাই আঙুলে ব্যথা পাবেনা। চার বছর বয়সীদের জন্য হয়ে পারে চমৎকার উপহার। একদম ছোট বাচ্চাকেও পরিয়ে দিতে পারেন। তবে সে যদি আংগুল থেকে নিজেই খুলে ফেলতে পারে (১ থেকে ৩বছর) তাহলে না দেয়াই ভাল, কারণ আপনি লক্ষ্য করার আগেই সে মুখে পুরে দিতে পারে এই ছোট্ট জিনিসটি

আপনার পোষাকের সাথে রং  মিলিয়ে পুতি বসিয়ে নিজের জন্যও বানাতে পারেন এই অভিনব আংটি।













 মাত্র দশ মিনিটে বানানো এই ছোট্ট গয়নাটি আপনাকে দিতে পারে অতুলনীয় আনন্দ।
ধন্যবাদ।

Wednesday, March 16, 2016

প্রাণজুড়ানো বেলের শরবত


সবাই কে স্বাগত শখের দুনিয়া শখের ব্লগে।

গরমে বেলের শরবত কার না ভালো লাগে! আমার বাসায় সবারই খুব পছন্দ।
কিন্তু এই শরবত বানানোর অনেক ঝামেলা। কারণ বেলে অনেক আঁশ থাকে, বিচি ও পিচ্ছিল। ছোটবেলায় দেখেছি, বেলের শরবত বানানো মানে অনেক কারিগরি। প্রথমে আমরা ছোটরা বেল ফাটিয়ে চামচে তুলে দিতাম। নানী খাওয়ার টেবিলে বসে শরবত বানাতো। চালনিতে চেলে ছাকনি তে ছেকে চলত আশ দূর করার কাজ। আর তারপরও খেতে গেলে আশ থাকবেই।এতগুলো বাসন কোসন লাগত যে পরে সেগুলো ধুতে গিয়ে মেজাজ খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক।

আজ আমি বলছি সাত তাড়াতাড়ি কিভাবে বেলের শরবত বানানো যায়।
এজন্য বেশি তৈজসপত্র এঁটো করতে হবেনা। দরকার বড় একটি গামলা একটি জগ
আর একটি বড় স্টিলের ঝাঁঝরি।  সাধারণত বড় ঝাঁঝরি নুডলস রান্নার সময়ই ব্যবহ্রিত হয়। এই ঝাঁঝরি অন্য অনেক কাজে ব্যাবহার করতে পারবেন, তার একটা হল বেলের শরবত বানানোয়।

প্রথমে বেল তুলে নিন।


গামলায় পানি দিয়ে বেল আশ আর বিচি সহ চটকে শরবত বানান।
শরবতটি জগে নিন। এখন ঝাঁঝরি গামলায় বসিয়ে শরবতটুকু ছেকে নিন।

তরল অংশটুকু তাড়াতাড়ি ছাকা হয়ে যাবে।ঘন অংশ টুকু হাতে ঘষে ঘষে ছেকে নিন।
 এখন সরবতে চিনি মিশান। দুধ বা দই দিতে পারেন সাথে।
ঠান্ডা করে বা বরফ মিশিয়ে পরিবেশন করুন প্রাণজুড়নো বেলের শরবত।
ধন্যবাদ।




Tuesday, March 15, 2016

অবসরে পাপোস বানান


আমরা, এই সময়ের মানুষ সব সময়েই ছুটে চলেছি চরম ব্যস্ততায়।
নানান কাজের তাড়া আমাদের। সময়ের আগে যেন সব শেষ করা চাই।
এই ব্যস্ততা যেন এক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। তাই, একখন্ড অবসর পেলেও
তা উপভোগ করতে ভুলে গেছি। অবসর যাপন কে মনে হতে থাকে বুঝি সময় নষ্ট করছি।
এই অদ্ভুত সমস্যা থেকে পরিত্রাণের একটা পরীক্ষিত উপায়
হল সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। তাই আমি বেছে নিয়েছি
ছোট্ট ছোট্ট সৃষ্টিশীল কাজে ছোট্ট একটু সময় বরাদ্দ রাখা।

আজ বলব সেই ধারাবাহিতায় আমার নতুন শেখা একটি পাপোস বানানোর গল্প।
স্বাগত আমার শখের দুনিয়া : শখের ব্লগে।

মজার ব্যাপার হল, পাপোসটি আমি বানিয়েছি ঘরে থাকা পুরোনো গেঞ্জি এবং 
ট্রাউজারের কাপড় দিয়ে। তাই এটা একই সাথে সস্তা এবং প্রয়োজনীয়।

প্রথমে পছন্দসই কাপড় সেলাই বাদে লম্বা লম্বা করে কেটে নিন।









কাপড়ের খন্ডটি লম্বালম্বি ভাবে টান দিয়ে দেখুন দুই প্রান্ত গোল হয়ে পেচিয়ে যাবে।









এখন দুই আঙুলে একটি খন্ড পেচিয়ে একটি ফস্কা গেরো দিন। হয়ে গেল আপনার প্রথম চেইন।




















এভাবে লম্বা একটি বেণী তৈরী হবে
একটি খন্ড বোনা শেষ হলে আরেকটির সাথে জোড়া দেয়া খুব সহজ। এইজন্য আপনার শুধু লাগবে একটি কেঁচি


পুরানো এবং নতুন কাপড়ের খন্ড একসাথে নিয়ে আড়ায়াড়ি করে ভাজ করুন। কাপড় দুটিতে একটি করে ছিদ্র করুন কেচি দিয়ে।
এখন ভাজ খুলে একটি খন্ডের উপর অন্য খন্ডটি বিছান। নতুন খন্ডের লেজ ধরে ঘুরিয়ে ছিদ্র দিয়ে বের করে দিন। শক্ত করে টানুন। দুই কাপড়ের মাঝে একটি গিঁট পড়বে।




























এখন আগের মতই চেইন বানাতে থাকুন।

পুরো বেনী বানানো হয়ে গেলে একমাথা থেকে পেচান এবং সেলাই করে আটকে দিতে থাকুন। গোল একটি পাপোস তৈরী হবে।











এখন একটি কাপড়ের শপিং ব্যাগের উপর সেলাই করে বসিয়ে দিন। তাহলে আর আপনার পাপোসটি টাইলসের মেঝেতে কুঁচকে বা পিছলে যাবেনা। বরং মজবুত হবে।

'










এখন শপিং ব্যাগের বাড়তি অংশ কেটে ফেলুন। হয়ে গেল আপনার হাতে বানানো সহজ সুন্দর প্রয়োজনীয় একটি জিনিস।পাপোসটি রাখতে পারেন আপনার বিছানার পাশে। গেঞ্জির কাপড়ে বোনা  বলে এটি নরম আর পানি শোষোণ করতে পারে অনেক বেশি। তাই বাথরুমের সামনেও রাখতে পারেন।
পছন্দমত রঙের কাপড় নিয়ে খেলুন। যত বব্যস্তই হোন, দেখবেন পাপোসটির দিকে চোখ পড়বেই আর এক নিমিষেই দূর হয়ে যাবে দুশ্চিন্তার বাড়তি চাপ।
ধন্যবাদ।


Monday, March 14, 2016

চটজলদি বরই আচার




আপনি কি আমার মতই টক খেতে ভালোবাসেন, কিন্তু রান্নাবান্নায়
খুব পটু নন? তাহলে এই লেখাটা আপনার খুব কাজে লাগবে।
আজ বলছি আমার নিজের টেকনিকে চটজলদি আচার বানানোর কথা।
স্বাগত আমার শখের দুনিয়া : শখের ব্লগে।

আমার নানী খুব ভাল আচার বানাতে পারতেন। উনার হাতের আমের
পলসীর আচার, জলপাই এর তেলের আচার, আমের টক মিষ্টি আচার,
আমের তেলের আচার, একটার চেয়ে একটা হত লোভনীয় আর মজা হত।
তবে তখনকার দিনে আচার বানানো ছিল কষ্টসাধ্য। আচার বানানোর বিশাল
কর্মযজ্ঞ দেখে ভয় পেয়ে যেতাম। এক সময় মনে হতে থাকল, আর যাই হোক আচার বানানো আমাকে দিয়ে হবেনা।

একদিন সাহস করে নানীর কথা।মনে করে আমের একটি আচার দিয়ে চেষ্টা করে দেখলাম, খুব কঠিন নয়।। আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল।চটজলদি বানানোর
জন্য কিছু বুদ্ধি বের করলাম।

১. শুকনো এবং ঘরে বহুদিন রাখা যায় এমন কিছু জিনিস সংগ্রহে রাখুন। যেন
প্রতিবার আচার বানাওর জন্য একদম গোড়া থেকে শুরু করতে না হয়
যেমন- সরিষার তেল, শুকনা মরিচ, চিনি, লবণ, ভিনিগার, পাঁচফোড়ন,গুড়।
আমি একদিন সময় বের করে পাঁচফোড়ন ঝেড়ে ভেজে ব্লেন্ডারে গুড়ো করে  রেখে দিয়েছি। তাই যখন খুশি আচার বানাতে বসে যাই।

২. তৈজস পত্র বাছাই- টক জিনিস সবসময় লোহার কড়াইয়ে সিদ্ধ দিতে হয়। এলুমিনিয়াম এর জিনিসে টক রাখলে তিতা হয়ে যায়। নাড়ার কন্য দরকার কাঠের চামচ।

৩. ভাল করে লক্ষ্য করুন, বালি নেই তো? বারে বারে বরই ধুয়ে নিন।শুকনা মরিচ বা অন্য মশলা গুলোও ভাল করে বেছে নিন।না হলে আপনার সব কষ্ট পন্ড হবে

৪. মাঝে মাঝে বয়ামগুলো রোদে রেখে দিন। আচার ভালো থাকবে।

এখন বলছি, প্রস্তুত প্রণালী:
প্রথমে বরই ও তেতুল সিদ্ধ করে তাতে গুড় দিয়ে জ্বাল করেছি।
সিদ্ধ সবকিছু ঘুটনী দিয়ে ভালোমত ঘুটে নিয়েছি।। চাইলে আপনি বিচিগুলো চেলে
ফেলে দিতে পারেন।
একটা কড়াইয়ে সরিষার তেল, পাঁচফোড়ন গুড়া শুকনা মরিচ কিছুখন ভেজে আচারের মিশ্রণ ঢেলে দিন। একটু ভিনিগার দিন। স্বাদমত লবণ, জিরার গুড়া,ধনিয়ার গুড়া, মরিচের গুড়া দিন।
অল্প আঁচে বসিয়ে রাখুন।মাঝে মাঝে নেড়ে দিন।

ব্যাস হয়ে হয়ে গেল চটজলদি বরই এর আচার। একই ভাবে মৌসুমি অন্য ফল দিয়েও বানিয়ে ফেলতে পারেন আচার।
ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন আর আমার সাথে শেয়ার করুন আপনার আচার তৈরী করার গল্প।
ধন্যবাদ।

Saturday, March 12, 2016

কাজের জিনিস : মাজুনি

সবাইকে সাধুবাদ জানাচ্ছি আমার ব্লগে।
শখের দুনিয়া :শখের ব্লগ।

আমাদের সবারই অনেক শখ আছে। আমাদের একঘেয়ে
দৈনন্দিন জীবনকে বর্ণীল  এবং আনন্দময় করে তোলে।

আজ আমার একটা শখের কথা বলি। আমি সেলাই করতে পছন্দ করি।
খুব ভাল সেলাই জানি, তা নয়। ছোট থেকেই পুরানো কাপড় কেটে জুড়ে
পুতুল, পুতুলের জামা, কাথা, বালিশ, শাড়ি বানাতাম। আমি পুতুল খেলতেও
খুব ভালোবাসতাম।

আমার মায়ের একটা সেলাই মেশিন ছিল। পায়ে চালানো ইলেক্ট্রিক সেলাই মেশিন
ব্রাদার্স কোম্পানির। মেশিন টার বয়স আমার চেয়েও বেশি।
এই মেশিনে আমি টুকটাক সেলাই করেছি।

আজ আপনাদের বলব কিভাবে আমি ব্যবহার করা শপিংব্যাগ এবং নেটের ব্যাগ জুড়ে
খুব কাজের একটা জিনিস বানিয়েছি। মাজুনি।



আপনি চাইলে এটি গোসলের গা মাজুনি হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন। বা থালাবাটি, বালতি মগ ধোয়ার কাজে। অনেক সময় খাওয়ার টেবিলের ক্লথ বা কাঁচ - সাবান ডলে ধুতে হয়। তখন এটি আপনার কাজে লাগবে।
হাল্কা। সহজে শুকিয়ে যায়। গোসল খানায় একটি আংটা বা কলের সাথে
ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। আর খুব সস্তা। কারণ এটি আপনি আপনার ঘরে থাকা
শপিং ব্যাগ আর নেট ব্যাগ জুড়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন খুব সহজেই।

প্রথমে শপিং ব্যাগ মাপমত কেটে নিন। মোটামুটি  ৬"X ৪"


এই কাপড়টি ভিতরে থাকবে। এবং সেলাইয়ের পর দেখা যাবেনা। তাই আপনি সিল-ছাপ্পড় সহ দিকটা মাপমত
কেটে নিতে পারেন। দুইটি টুকরা নিন। একটির সাথে আরেকটি সেলাই করে জুড়ে নিন
এতে আপনার জিনিসটি মজবুত হবে



কাপড়টির দুইপাশে নেটব্যাগ কয়েক পরতে বিছান।
সেলাই করে আটকে দিন।













কাপড়টি আলোর দিকে ধরুন। ভিতরের কাপড়ট দেখা যাবে। সেই অনুসারে বাড়তি নেটব্যাগ কেটে নিন
এখন দেড় থেকে দুই ইঞ্চি চওড়া শপিং ব্যাগের টুকরা কেটে নিন এবং কাপড়টির চারদিকে লাগিয়ে একটি বর্ডার বানান








বর্ডারটির কাপড় একপাশে লাগানো হলে অন্যদিকে ঘুরিয়ে কিনার ভাঁজ করে জিগজ্যাগ সেলাই দিয়ে আটকে দিন
এতে আপনার মাজুনি টেকসই হবে।দেখতেও ভালো লাগবে।









সবশেষে দরকার একটি হাতল। সে জন্য আপনি আপনার শপিং ব্যাগের হাতলটি মাপমত কেটে নিন।
তারপর দুই ভাঁজ করে নিন।
কোণাকুণি করে হাতলটি লাগিয়ে নিন আপনার মাজুনির সাথে।












 ব্যাস,হয়ে গেল আপনার নিজ হাতে বানানো দরকারি একটি জিনিস।
রঙণ-বেরঙ এর শপিং ব্যাগ আর নেট ব্যাগ ব্যবগার করে বানিয়ে দেখুন
অনেক সুন্দর হয়।
 
কাছের প্রিয় মানুষকে উপহার ও দিতে পারেন এই দারুণ কাজের জিনিস টি
ধন্যবাদ।